বিবর্তনের আর্কাইভ
ভ্রান্ত ধারণা
অজৈবজনি (Abiogenesis) ছাড়া বিবর্তন তত্ত্ব অচল
১) অনেকে মনে করেন বিবর্তন তত্ত্ব বোধ হয় প্রাণের উৎস নিয়েও কাজ করে। এটি কিন্তু সর্বাংশে সত্য নয়। উৎস নিয়ে আসলে বিবর্তন তত্ত্বের কোন মাথাব্যথা নেই। এটি কাজ করে মূলতঃ প্রাণের উৎপত্তির পর থেকে কিভাবে তার বিকাশ ঘটেছে তা নিয়ে। যদিও বিজ্ঞান জীবনের উৎস সন্ধানে খুবই তৎপর (যেমন, প্রাণের জৈব রাসায়নিক তত্ত্ব বা অজৈবজনি, কিংবা প্যানস্পারমিয়া ইত্যাদি), কিন্তু এগুলো কোনটাই বিবর্তনতত্ত্বের মূল বিষয় নয়। যেভাবেই জীবনের উৎপত্তি ঘটুক না কেন, সেটি কী করে পদে পদে বিকশিত হল, বিবর্ধিত হল, উদ্ভব ঘটলো নতুন নতুন প্রজাতির- এগুলোই বিবর্তন তত্ত্বের মূল আলোচ্য বিষয়[1]।
অজৈবজনির তত্ত্ব ছাড়া বিবর্তন অচল বলা আর মেটিওরোলজির (meteorology) জ্ঞান ছাড়া ছাতা কাজ করবে না বলা –একই কথা[2]।
২) প্রাণের জৈব রাসায়নিক তত্ত্ব তথা অজৈবজনিও আলাদাভাবে পরীক্ষিত এবং একটি বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা[3]। এই অজৈবজনির বাস্তবতা পঞ্চাশের দশকে ইউরে-মিলার তাদের বিখ্যাত পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। এই বাস্তবতার মঞ্চায়ন পৃথিবীতে হতে পারে, কিংবা হতে পারে দূরবর্তী কোন গ্রহে, কিংবা হয়তো মহাশূন্যে[4]। প্রাণের উৎস নিয়ে গবেষণায় যদি অজৈবজনির তত্ত্ব দরকার হয়, তাতে কোন অসুবিধার কারণ নেই।
[1] বন্যা আহমেদ, বিবর্তনের পথ ধরে, অবসর, ২০০৭ (পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত ২০০৮), পৃষ্ঠা ১১
[2] Mark Isaak, The Counter-Creationism Handbook, University of California Press, 2007, p 51.
[3]অভিজিৎ রায় এবং ফরিদ আহমদে,মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে, অবসর, ২০০৭ (পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত ২০০৮)।
[4] অভিজিৎ রায় এবং ফরিদ আহমদে,মহাবিশ্বের প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে, অবসর, ২০০৭ (পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত ২০০৮), পৃষ্ঠা ৭৪