ব্যালাড অব এ্যা সোলজারঃ চলচ্চিত্রে মানবীয় অনুভূতির অনন্য রূপায়ন
এ পর্যন্ত যত ছবি আমি দেখেছি তার মধ্যে আমার প্রিয়তম চলচ্ছিত্র হচ্ছে ব্যালাড অব এ্যা সোলজার। যে কেউ জিজ্ঞেস করলে চোখ বন্ধ করে নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারি এরকম হৃদয়ছোঁয়া অসাধারন ছবি আমি আর দেখিনি। এর মানে অবশ্য এই না যে আমি দাবী করছি এটি চলচ্চিত্র হিসাবে সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র, চিত্রকলা আর চিত্রশব্দ (কবিতা) এই তিন বিষয়ে আমার জ্ঞান প্রায় শূন্যের কোঠায়। আক্ষরিক অর্থেই গন্ডমূর্খ বলা যায় আমাকে এ বিষয়গুলোতে। প্রায়শই দেখা যায়, কবিতা বিদগ্ধ ব্যক্তিরা যে কবিতাকে অসাধারণ কাব্যগুনে ভরপুর কবিতা বলে রায় দিয়ে দেন, সেই কবিতা আমি দু’লাইনের বেশি তিন লাইন পড়ার ধৈর্য্য রাখতে পারি না। আবার আমার কাছে যে কবিতাগুলোকে মনে হয় আনন্দের অফুরন্ত ঝর্নাধারা, রাতের আকাশে ঝিকিমিকি তারার মত অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত, সেগুলোকে দেখি সমালোচকেরা ধারালো ছুরি দিয়ে চরম নিষ্ঠুরভাবে ফালাফালা করে ফেলছেন অতি নিম্নস্তরের কবিতা বলে। চিত্রকলার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ফুল, পাখি, পাহাড়-পর্বত বা বাকশোভিত নারীর ছবি বুঝতে তেমন কোন অসুবিধা হয় না আমার। বরং বেশ বিজ্ঞের মতই কোনটা আসলের কত কাছাকাছি পৌঁছেছে বেশ আগ্রহের সাথেই তা যাচাই করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিমূর্ত চিত্রকলার সামনে দাঁড়ালেই সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে যায় আমার। মাথা চুলকে অবোধ শিশুর মত এইসব আবোল তাবোল হিবিজিবি আঁকিজুকির কি মানে তা বোঝার আপ্রাণ ব্যর্থ চেষ্টা চালাই আমি। এই যেমন, American Film Institute (AFI), Sight & Sound International Critics Survey বা The Village Voice এর করা তালিকা অনুযায়ী চলচ্চিত্রের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম চলচ্চিত্র হচ্ছে সিটিজেন কেইন। বেশ মনে আছে শ্রেষ্ঠতম এই ছবিটি আমি দেখতে বসে অর্ধেক শেষ হবার আগেই টেলিভিশনের সামনে নাক ডেকে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুমিয়ে পড়ার ভয়েই কিনা জানি না দ্বিতীয়বার আর সাহস হয়নি ছবিটি দেখার। দুর্ভাগ্য, আমার ইনসমনিয়া নেই। বিছানায় গা এলাতে না এলাতেই স্বপ্নহীন গভীর ঘুমের রাজ্যে চলে যাই আমি। নইলে ঘুমের অষুধ হিসাবে সিটিজেন কেইনকে কাজে লাগানো যেতো বেশ ভালভাবেই।
বোদ্ধা দর্শকেরা যেখানে ছবি দেখার সময় এর সম্পাদনা, ক্যামেরার কাজ, আলো-ছায়ার কারসাজি, শট সিলেকশন, ফ্রেমিং, নান্দনিকতাসহ আরো অসংখ্য কারিগরি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখে, আমি সেখানে চলচ্চিত্রের হিমশৈলের নিচে লুকানো কি আছে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দিব্যি উপভোগ করে ফেলি এর বহিরাঙ্গকে। আমার কাছে কোন চলচ্চিত্র ভাল কি মন্দ, পছন্দ কি অপছন্দের তা বোঝার খুব সহজ উপায় হচ্ছে ছবিটি দেখে আমি নিজে মজা পাচ্ছি কিনা। যে ছবি আমার মননে গেথে যায়, যে ছবি আমার হৃদয়ের গহীন কোনে সেতারের টুংটাং শব্দ তোলে, যে ছবি বার বার দেখতে ইচ্ছা করে সেই ছবিই হচ্ছে আমার কাছে প্রিয় ছবি। সেই ছবি চলচ্চিত্রের মানদন্ডে রসোত্তীর্ন কিনা, বা শিল্প মানসম্পন্ন হলো কিনা সে সব বিষয়ে আমার মাথাব্যথা খুবই কম। এই সব জটিল বিষয় আমি বুঝিও না, বোঝার খুব একটা আগ্রহও নেই।
আমার একটা অত্যন্ত বাজে অভ্যাস হচ্ছে, ঘুরে ফিরে আমি আমার পছন্দের জিনিষগুলো বার বার নেড়েচেড়ে দেখি। একই বই বার বার পড়ি, একই কবিতা আউড়ে যাই ক্ষণে ক্ষণে, একই গান শুনতে থাকি ক্রমাগত ক্লান্তিহীনভাবে, দেখার জন্য ঘুরে ফিরে এ্যালবাম থেকে বের করি প্রিয় কোন চলচ্চিত্রের সিডি। ব্যালাড অব এ্যা সোলজার সেরকমেরই একটি ছবি। ছবিটি আমি প্রথম দেখেছিলাম বাংলাদেশে থাকতে অনেক আগে। আসল ছবিটি রাশান ভাষায়। বিটিভি দেখিয়েছিল ইংরেজীতে ডাব করা ভার্সন। এর অনেক বছর পর মিশিগানের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় সুযোগ আসে মূল রাশান ভাষার ছবিটি দেখার। ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটির ডেভিড আডামানী লাইব্রেরীতে চলচ্চিত্রের খুব ভাল একটা সংগ্রহ আছে। আমার পছন্দের অনেক ছবিই আমি দেখেছি এখান থেকে নিয়ে ।
এর পর অবশ্য অসংখ্যবার দেখা হয়েছে ছবিটা। তারপরও কখনই এর আবেদন বিন্দুমাত্র কমেনি আমার কাছে । যতবারই ছবিটা দেখি প্রথমবার দেখার সেই একই অনুভূতি অনুভব করি মগজের কোষে কোষে। প্রতিবারই বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠে কষ্টের অব্যক্ত নদী। যন্ত্রনার নীল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে হৃদয়ের বেলাভূমিতে। শুধু যে আমারই এই অনুভূতি হয় তা না। ছবিটি দেখার সময় আন্নাকেও দেখি আমার চেয়েও তীব্র আবেগে ভেসে যেতে। আমার সাথে আন্না যতবারই এই ছবিটা দেখেছে ততবারই দেখেছি ওর চোখে নোনাজলের অঝোর ধারা। প্রতিবারই ছবি শেষ হবার পর আমাকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে ও। আন্নার ভাষ্য অনুযায়ী আমি নাকি লৌহ কঠিন পাষাণ হৃদয়ের অধিকারী মানুষ। ছবির শেষ দৃশ্যে যখন স্বল্পক্ষণের জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ তরুণ সৈনিকের মা ছেলেকে একনজর দেখার জন্য দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের ক্ষেতের মধ্য দিয়ে প্রাণপনে ছুটে আসতে থাকে, সেই পাষাণ হৃদয় আমিও তখন চশমা মোছার অছিলায় চোখের জল আড়াল করার ব্যর্থ চেষ্টা করি। কষ্ট মেশানো ভালো লাগায় ছেয়ে যাওয়া এই ধরনের অসংখ্য দৃশ্য দিয়ে ভরপুর এই ছবিটি। আর এ কারণেই গন উইথ দ্য উইন্ড, ক্যাসাব্লাংকা, রোমান হলিডে, সাউন্ড অব মিউজিক, বাইসাইকেল থিফ, ক্রেনস আর ফ্লায়িং বা পথের পাঁচালিকে হঠিয়ে দিয়ে আমার প্রিয়তম চলচ্চিত্রের নন্দিত নাম ব্যালাড অব এ্যা সোলজার।
পুডোভকিন, কুলেশভ, আইজেনস্টেইন এর মত যে সমস্ত চলচ্চিত্র নির্মাতারা বিশের দশকে সোভিয়েট ইউনিয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তারা বিভিন্ন কারনে চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে দূরে সরে ছিলেন। পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত সোভিয়েট জনগণের জন্য চরম দূর্দশার সময়। একেতো যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষত তখনো সেরে উঠেনি ঠিকমত। তার উপর এই সময় শুরু হয় রাজনৈতিক নির্যাতন। তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে যাকে তাকে ধরে পাঠিয়ে দেওয়া হতো লেবার ক্যাম্পে। ১৯৫৩ সালে স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর এই অবস্থার সাময়িক অবসান ঘটে। নিকিতা ক্রুশ্চেভ সোভিয়েট ইউনিয়নের দায়িত্ব নিয়ে দমবন্ধ করা ওই গুমোট অবস্থার পরিবর্তন ঘটান। তবে তা খুবই স্বল্পকালীন সময়ের জন্য। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৮ এই পাঁচ বছর কম্যুনিষ্ট পার্টি অসংখ্য সংস্কার কর্মসূচী গ্রহণ করে। এই সংস্কার কর্মসূচী চলচ্চিত্র শিল্পেও প্রভাব ফেলেছিল। এর আগ পর্যন্ত সোভিয়েট চলচ্চিত্র ছিল সামাজিক বাস্তবতা নীতি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত কঠোর সেন্সরশীপের আওতায়। এই নীতি অনুযায়ী চলচ্চিত্রকারদের পার্টি লিডারদের বীরত্ব এবং সাধারণ লোকজনের দেশপ্রেমকে মহিমান্বিত করে চলচ্চিত্র নির্মান করা ছিল বাধ্যতামূলক।
এই পরিবর্তনের ফলশ্রুতিতে এই দশকেই তৈরি হয় সোভিয়েট ইউনিয়নের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এবং সৃষ্টিশীল চলচ্চিত্রসমূহ। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্রেনস আর ফ্লায়িং, ফেইট অব এ্যা ম্যান এবং ১৯৫৯ সালে মুক্তি পাওয়া গ্রিগরী চুখরাই পরিচালিত ব্যালাড অব এ্যা সোলজারি। মুক্তি পাওয়ার পরই ইংল্যান্ড, ইরান, ইটালী, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অসংখ্য পুরষ্কার জিতে নেয় ছবিটি। রাশিয়াতেও অত্যন্ত সম্মানসূচক লেনিন পুরষ্কার দেওয়া হয় ব্যালাড অব এ্যা সোলজারকে। তবে সবচেয়ে উপযুক্ত পুরষ্কার আসে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে। “উতুঙ্গ মানবিকতা এবং অসাধারণ গুণসম্পন্ন” হওয়ার কারণে বিশেষ পুরষ্কারে ভূষিত করা হয় ব্যালাড অব এ্যা সোলজারকে।
ব্যালাড অব এ্যা সোলজার চরম দূর্দশায় মধ্য দিয়ে কালাতিপাত করা মানুষের উপর যুদ্ধের নির্মম প্রভাবকে রূপায়িত করেছে, সেই সাথে তুলে এনেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মানবিক দিক। এটা যুদ্ধের ছবি, কিন্তু চুখরাই খুব সচেতনভাবেই যুদ্ধকে ঠেলে দিয়েছেন অনেক অনেক পিছনে। মূখ্য হয়ে উঠেছে মানবীয় সম্পর্কের কোমল দিকগুলো এবং এর শিল্পিত বহিঃপ্রকাশ।
ছবির শুরুতেই অজানা বর্ণনাকারী জানিয়ে দেয় যে এটা এক সৈনিকের কাহিনী যে যুদ্ধের পরে আর ফিরে আসেনি বাড়িতে। যুদ্ধে হারিয়ে যাওয়া সেই সৈনিক আর কেউ নয়, মাত্র ঊনিশ বছরের তরুণ আলিওশা (ভ্লাদিমির ইভাশভ)। সিগন্যাল কোরের এই তরুণ সৈনিক অত্যন্ত আকস্মিকভাবেই যুদ্ধক্ষেত্রে ধ্বংস করে ফেলে দু’টো নাৎসি ট্যাংক। পুরষ্কার হিসাবে মেডালের চেয়ে গ্রামের বাড়িতে যেয়ে বিধবা মায়ের ঘরের চালার ফুটো সারানোর জন্য ছুটি চেয়ে বসে সে। ছয়দিনের ছুটিও মঞ্জুর হয় তার। দুই দিন যাওয়ার জন্য, দুই দিন আসার জন্য আর দুই দিন চাল ঠিক করার জন্য।
শুরু হয় আলিওশার ঘটনাবহুল বাড়ির দিকে যাত্রা । আর সেইসাথে চুখরাই সুনিপুন শিল্পীর দক্ষতায় আলতো ছোঁয়ায় কাব্যময় ছন্দে দর্শকের সামনে তুলে ধরতে শুরু করেন সোভিয়েট জীবনধারার। মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার পথে আলিওশা প্রত্যক্ষ করতে থাকে, যুদ্ধ, ক্ষুধা আর হিংস্রতা দিয়ে ক্ষত বিক্ষত রাশিয়াকে। পরিচিত হতে থাকে বিচিত্র সব মানুষের, উন্মোচিত হতে থাকে মানব সম্পর্কের অজানা দিকসমূহ। এই যাত্রা পথেই কার্গোবাহী ট্রেনে আলিওশার সাথে পরিচয় ঘটে উদ্বাস্তু কন্যা শুরার (ঝানা প্রখরেনকো)। সূত্রপাত ঘটে দুই তরুণ তরুণীর মিষ্টি কিন্তু ক্ষণস্থায়ী প্রেমের। আলিওশা এবং শুরার চরিত্রের জন্য চুখরাই অভিনয় স্কুল থেকে সম্পূর্ণ নতুন দু’টি ছেলেমেয়েকে তুলে এনেছিলেন। তার ধারণা ছিল তিনি যেভাবে চরিত্র দু’টোকে দর্শকদের সামনে উপস্থাপনা করতে চাচ্ছেন তা পেশাদার অভিনেতাদের দিয়ে হবে না। তার এই ধারণা যে পুরোপুরি সঠিক ছিল তা আলিওশকা এবং শুরার সতেজ তারুণ্যময় উপস্থিতিই প্রমাণ করে।
ক্রুশ্চেভের ওই স্বল্পকালীন উদার সময়ে সেন্সর এর কাঁচি কিছুটা অলস থাকলেও ব্যালাড অব এ্যা সোলজার বেশ ভালই বিতর্ক তৈরি করেছিল সোভিয়েট ইউনিয়নে। তবে এই বিতর্ক ছবির রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে নয়, বরং ছবিতে দৃশ্যমান কিছু যৌনতার কারণেই তৈরি হয়েছিল। এর আগ পর্যন্ত যৌনতা ছিল সোভিয়েট চলচ্চিত্রে ডুমুরের ফুলের মত। যদিও আলিওশা এবং শুরার প্রেম ছিল কামহীন নিষ্পাপ ধরনের, কিন্তু একটি দৃশ্যে যখন তারা দুজনে প্রায় চুমু খেতে গিয়েছিল সেই সময় যৌনতার যে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল তাকে লুকানো যায়নি কোনভাবেই। এছাড়া ছবিতে শুরার প্রথম আগমনেই স্কার্ট সরিয়ে মোজা ঠিক করার দৃশ্য, আড়াল থেকে বড় বড় চোখ করে আলিওশার তা অবলোকন করা, বা নলকূপ থেকে পানি খাওয়ার সময় আলিওশার বুভুক্ষের মত তাকিয়ে থাকা অনেক রক্ষণশীলকেই অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল সেই সময়। তবে, এই ছবিতেই অবিশ্বস্ত এক স্ত্রীর পরকীয়ার যে বর্ণনা চুখরাই তুলে ধরেছেন তার কাছে এগুলো ছিল নস্যি মাত্র। সেই সময় সোভিয়েট শাসকদের কাছে ব্যাভিচার ছিল অস্তিত্বহীন বিষয়। চুখরাইয়ের এই “ভয়াবহ অপরাধের” কারণে কিছু কর্মকর্তা তাকে পার্টি থেকে বহিষ্কারের দাবীও তুলে ফেলেছিল। তার অশেষ সৌভাগ্য। দেশে বিদেশে ব্যালাড অব এ্যা সোলজারের অসামান্য সাফল্য তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল সেই মহাবিপদ থেকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় যুদ্ধবিরোধী মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে দেশে দেশে তৈরি হয়েছে অসংখ্য বিশ্বমানের চলচ্চিত্র। সেই তুলনায় আমাদের এত গর্বের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কি ধরনের চলচ্চিত্র হয়েছে তা ভাবলে বড় ধরনের দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে বুক চিরে। ধীরে বহে মেঘনা, মেঘের অনেক রঙ আর জয়যাত্রা ছাড়া বাকীগুলোর কথা যত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া যায় ততই মঙ্গল। আমাদের দেশে গ্রিগরী চুখরাই বা মিখাইল কালাটোজভ এর মত চলচ্চিত্রকার কবে জন্মাবে কে জানে, যারা একাত্তরের পটভূমিকায় তৈরি করবে ক্রেনস আর ফ্লায়িং বা ব্যালাড অব এ্যা সোলজারের মত যুদ্ধবিরোধী মানবিক গুণসম্পন্ন কালজয়ী সব চলচ্চিত্র।
প্রতীক্ষায় দিন গুনে যাই, দিন গুনে যাই সেই সে দিনের।
মায়ামী, ফ্লোরিডা। farid300@gmail.com
===============================================
মুক্তমনার মডারেটর, 'মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে' গ্রন্থের লেখক।